বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৩ অপরাহ্ন
জামালপুরে হিজড়াদের একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠানে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন মীর হারুন ওরফে পিংকি (৩৫)। এরপর মরদেহ গোপনে দাফন করা হয়। ঘটনার ১০ বছর পর রাজধানীর তুরাগে কবর থেকে তোলা হলো তাঁর মরদেহ।
তুরাগের রাজাবাড়ি কবরস্থান থেকে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে মরদেহ উত্তোলনের কাজ শুরু হয়। দুপুর দেড়টার দিকে মরদেহের অংশ বিশেষ উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়।
এ সময় জামালপুর জেলা জজের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (সহকারী কমিশনার ভূমি) কাউছার হামিদ, জামালপুরের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) এসআই এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মহির উদ্দিন খান উপস্থিত ছিলেন। এতে তুরাগ থানা পুলিশের এসআই আবুল খায়েরের নেতৃত্বে একটি টিম সহযোগিতা করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এসআই মহির উদ্দিন খান বলেন, ‘আদালতের নির্দেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তৃতীয় লিঙ্গের পিংকি হিজড়ার মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। মরদেহের অংশ বিশেষের ডিএনএ সংগ্রহ করে সিআইডি ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে। পরে রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়া হবে।’
২০১২ সালে ৮ মার্চ রাতে তুরাগের রাজাবাড়ি পুকুরপাড়ে পিংকির মরদেহ পাওয়া যায় বলে প্রচার করা হয়। এরপর রাজাবাড়ি এলাকার ওই কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। এ ঘটনায় পিংকি হিজড়ার বোন শাহনাজ বেগম জামালপুর জেলা জজ আদালতে গত ৩০ মে বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগে এনে মামলা করেন। মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১০ বছর আগে চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে উত্তরার আপন হিজড়া ও কপি হিজড়ার দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। দ্বন্দ্ব মীমাংসার জন্য ২০১২ সালের ৭ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে জামালপুর জেলার ইসলামপুরের বটচরে হিজড়া সম্প্রদায়ের গুরু হায়দার হিজড়ার গ্রামের বাড়িতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে উভয়পক্ষের মধ্যে এলাকা ভাগাভাগি নিয়ে তর্ক শুরু হয়। ওই সময় পিংকি হিজড়া স্বপ্না ও কচি হিজড়াদের পক্ষ নেন। পরে আপন আক্তার ওরফে সোহেল ওরফে আপন হিজড়া, ঝুমা ওরফে সবুজ হিজড়া, আব্বাস উদ্দিন আশিক, সজিব ওরফে সোনালী হিজড়া, রিফাত আলী শিকদার ওরফে শ্যামা হিজড়া সোহাগ ওরফে সোনালো হিজড়া এবং শান্ত আক্তার ওরফে শান্ত হিজড়া পিংকিকে বেধড়ক মারধর করে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলে। পিংকির সঙ্গী কচি হিজড়া ও তাঁর গ্রুপ প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যায়। পরে আসামিরা মরদেহটি রাজধানীর তুরাগে এনে দাফন করে।
এ বিষয়ে হিজড়া সম্প্রদায়ের গুরু ও মামলার এক নম্বর আসামি আপন আক্তার ওরফে সোহেল ওরফে আপন হিজড়ার স্বামী আব্বাস উদ্দিন আশিক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘পিংকি হিজড়া তুরাগের রাজাবাড়ি পুকুরপাড় এলাকায় মারা গেছে। তখন এ বিষয়ে আমি কিছুই জানতাম না। তখন আপনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল না। তার দেড় বছর পর আপনের সঙ্গে আমার সম্পর্ক হইছে। আমি আসার পর জানলাম কচি হিজড়া ওরে শরবতের লগে বিষ খাওয়াইয়া মারছে।